মাস্তান-বন্দুকবাজবাহিনী দরকার নেই: শামীম ওসমান

নারায়ণগঞ্জে সন্ত্রাসী ও মাস্তানদের প্রশ্রয় না দিতে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহবান জানিয়েছেন সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।

পুলিশ মেমোরিয়াল ডে উপলক্ষ্যে রোববার (১ মার্চ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনসে জেলা পুলিশ আয়োজিত আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান এ আহবান জানান।

এ প্রসঙ্গে পুলিশ প্রশাসনকে উদ্দেশ্যে করে শামীম ওসমান আরও বলেন, আমার কাছের লোক হলেও আপনারা কাউকে খাতির করবেন না। কোনো মাস্তান, বন্দুকবাজ ও লাঠিয়াল বাহিনীর আমার দরকার নেই। কারণ আমি নিজেই জানি আমার থেকে বড় মাস্তান আর কেউ নাই। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে পুলিশ প্রশাসনের কিছু সংখ্যক লোকের কারণে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমাদের অন্য কোন দলকে দমন করার জন্য পুলিশের দরকার নেই। নারায়ণগঞ্জে আমরা একলাই যথেষ্ট।

শামীম ওসমান বলেন, রাতের বেলা ডাকলে এখনো ২ লাখ লোক বের করতে ১ ঘন্টা সময় লাগে ওই ক্যাপাসিটি আমার আছে। উণআশি সনে জিয়াউর রহমানকে আটকে রাখার লোক আমরা। কিভাবে আন্দোলন করতে হয় আর কিভাবে আন্দোলন ঠেকাতে আমরা সেটা জানি।

অতীতের কথা উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, ২০০১ সালের আগে পুলিশ ফোর্সের কাছে যত অস্ত্র না ছিল তার থেকে বেশি অস্ত্র একা আমার নিজের কাছেই ছিল। তবে আজকে আমার গাড়িতে অস্ত্র আছে কিনা তা আমি নিজেও জানি না। আমি সবসময় মনে করি আমি বিরোধী দল, আমি সাধারণ মানুষের দল।

শামীম ওসমান বলেন, আমার রাজনৈতিক দর্শন আগে ছিল একরকম। নিজের জন্য করতাম। জিন্দাবাদ শুনতে ভালো লাগতো। ২০০১ সালের পরে আমার এই চিন্তা পরিবর্তন হয়েছে। প্রশাসনের মধ্যে দলবাজিটা আমি পছন্দ করি না। আমি মনে করে আপনি আওয়ামী লীগ করতে এটা কোনো কোয়ালিটি হতে পারে না। আপনি যোগ্যতা সম্পন্ন এটাই আপনার কোয়ালিটি। আমি রাজনীতিবিদ কিন্তু চোর, এমন রাজনীতিবীদ থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো। এরা দেশকে খেয়ে ফেলে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারকে সৎ ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, আমি একজন জনপ্রতিনিধি সংসদ সদস্য হিসেবে নয়, জনগণ হিসেবেই তাদের প্রত্যেকটি কথায় টের পাই তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকতে চান। তাদের নিয়ে আমি গর্ব করি।

সামাজিক অবক্ষয় রোধের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, আমার একার পক্ষে নারায়ণগঞ্জকে ঠিক রাখা সম্ভব নয়। আপনাদের সকলকে নিয়েই নারায়ণগঞ্জকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে হবে। এজন্য তিনি পুলিশ প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন।

জেলা পুলিশ সুপার মোঃ জাহেদুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার হোসেন।

আলোচনা সভা শেষে কর্মরত অবস্থায় নিহত হওয়া পুলিশ সদস্যদের পরিবারকে সম্মননা ও আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।

এর আগে পুলিশ মেমোরিয়াল ডে উপলক্ষ্যে জেলা পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে নগরীতে বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি নগরীর প্রধান সড়ক ঘুরে পুলিশ লাইনসে গিয়ে শেষ হয়। র‌্যালিতে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান, সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার হোসেনসহ জেলা পুলিশ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা অংশ নেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন